ঢাকা-কুয়াকাটা-ঢাকা
✅ প্যাকেজ মূল্যঃ ৫,৫০০ টাকা, (জনপ্রতি) পিক আওয়ার
✅ সময়ঃ ৪ রাত ৩ দিন
✅ কোডঃ (R-250)
সর্বনিম্ন ০৪ (চার) জনের গ্রুপ (দুই বেডের এক রুম)
ট্যুর প্ল্যানঃ
কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে গাড়ি ছাড়বে ঢাকা থেকে রাতে। ইনশাআল্লাহ্ ভোঁরে পৌঁছে যাবেন কুয়াকাটা, তারপর সেখানে গিয়ে আপনার লাকেজ ব্যাগ হোটেল লবিতে রেখে অল্প সময়ের জন্য আশে পাশে ঘুরে আসতে পারবেন যেহেতু হোটেল চেক-ইন দুপুর ১২ ঘটিকায়।
১ম দিনঃ
★ হোটেল পৌঁছে চেক ইন দুপুর ১২:০০ ঘটিকায়।
★ দুপুরের খাবার- সাদা ভাত, কোরাল মাছ/মুরগি, বেগুন ভর্তা, মিক্স ভেজিটেবল, ডাল, সালাদ। এরপর ফ্রি টাইম।
★ রাতের খাবার- সাদা ভাত, সামুদ্রিক মাছ/মুরগি, আলু ভর্তা, মিক্স ভেজিটেবল, ডাল, সালাদ।
★ খাওয়া শেষে হোটেলে রাত্রীযাপন।
২য় দিনঃ
★ সকালের নাস্তা - পরটা, ডিম, ডালভাজি/ ডিম খিচুড়ী।
★ নাস্তা শেষে বাইকে করে ৯ টি স্পট পরিদর্শন করা।
★ দুপুরের খাবার - সাদা ভাত, সুন্দরী মাছ/মুরগি, শুটকি ভর্তা, মিক্স ভেজিটেবল, ডাল ও সালাদ।
★ রাতের খাবার - সাদা ভাত, সামুদ্রিক মাছ/মুরগী, বেগুন ভর্তা, মিক্স ভেজিটেবল, ডাল ও সালাদ
৩য় দিনঃ
★ সকালের নাস্তা - পরটা, ডিম, ডাল ভাজি / ডিম খিচুড়ী।
★ নাস্তা শেষে হোটেল চেক আউট করে লাকেজ ব্যাগ রিসিপশনে রেখে সাইডসিং এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা।
★ বাইকে করে ৯ টি স্পট পরিদর্শন।
★ দুপুরের খাবার - সাদা ভাত, ফ্লাইং ফিস/মুরগি, শুটকি ভর্তা, মিক্স ভেজিটেবল, ডাল ও সালাদ।
★ যাত্রা শেষঃ রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে বাস ছাড়বে কুয়াকাটা বাস কাউন্টার থেকে।
স্পট পরিদর্শন
১। জাতীয় উদ্যান ২। গঙ্গামতি সূর্য উদয় ৩। গঙ্গামতির লেক, ৪। কাউয়ার চর, ৫। লাল কাকরার চর,৬। ঝাউ বন,৭। অতিথী পাখির ঝাক, ৮। বৌদ্ধ বিহার, ৯। রাখাইন তাতী পল্লী, ১০।কুয়াকাটার কুয়া, ১১। কুয়াকাটার বৌদ্ধ মন্দির, ১২। শুটকী পল্লী,১৩। ফিশ ফ্রাই, ১৪। লেবুর চর, ১৫। ঝিনুক বীচ, ১৬। তিন নদীর মোহনা, ১৭। সুন্দর বনের পূর্বাংশ, ১৮। মিষ্টি পানির কুয়া।
প্যাকেজের অন্তর্ভূক্তঃ
✅ ঢাকা - কুয়াকাটা - ঢাকা এ.সি বাস সার্ভিসের টিকিট।
✅ লাক্সারিয়াস হোটেল (২ রাত)।
✅ ৭ বেলা খাবার।
✅ সাইডসিং (বাইকে করে ১৮ টি স্পট পরিদর্শন)।
প্যাকেজের অন্তর্ভূক্ত নয়
✅ কোন ব্যক্তিগত খরচ।
✅ কোন ঔষধ।
✅ কোন প্রকার দুর্ঘটনা জনিত বীমা।
✅ প্যাকেজে উল্লেখ করা হয়নি এমন কোন খরচ।
কাপল পলিসিঃ
২জন/ কাপল রুম এর জন্য পিক আওয়ারে ৫০০ টাকা এবং সুপার পিক আওয়ারে ১,০০০ টাকা প্রতি রাতের জন্য অতিরিক্ত পরিশোধ করতে হবে।
চাইল্ড পলিসিঃ
১ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত বাচ্চার বাসের সিট, খাবার এবং হোটেল রুম বাবা-মার সাথে শেয়ার করলে কোন প্রকার চার্জ প্রযোজ্য নয়।
বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়ঃ
১- একটি ভ্রমন পিপাসু মন থাকতে হবে।
২- ভ্রমনকালীন যে কোন সমস্যা নিজেরা আলোচনা করে সমাধান করতে হবে।
৩- ভ্রমন সুন্দরমত পরিচালনা করার জন্য সবাই আমাদেরকে সর্বাত্মক সহায়তা করবেন আশা রাখি।
৪- আমরা শালীনতার মধ্য থেকে সর্বোচ্চ আনন্দ উপভোগ করব।
৫- অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে যে কোন সময় সিদ্ধান্ত বদলাতে পারে, যেটা আমরা সকলে মিলেই ঠিক করব।
৬- বাংলার অভিযাত্রী ইকো টুরিজম এ বিশ্বাসী, টুরে যেয়ে প্রকৃতির কোন রকম ক্ষতি আমরা করবনা। কোন অপচনশীল বর্জ্য যেমন প্লাস্টিক প্যাকেট, বোতল যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলব ও ক্ষেত্রবিশেষে সাথে করে নিয়ে আসব। স্থানীয় জনবসতির সাথে বন্ধুত্বপূণ আচরন করব এবং যথোপযুক্ত সস্মান প্রদর্শন করব।
৭- কোন প্রকার মাদক দ্রব্য বহন বা সেবন করা যাবে না।
বি.দ্রঃ উপরে উল্লেখিত মূল্যে প্যাকেজ সেবা নিতে চাইলে পিক আওয়ারে ১৫ দিন এবং সুপার পিক আওয়ারে ৩০ দিন পূর্বে বুকিং করুন। নির্ধারিত সময়ের পর বুকিং দিতে চাইলে জনপ্রতি অতিরিক্ত ৫০০ টাকা প্রদান করতে হবে।
_-_-_-_-_* _-_-_-_-_
কুয়াকাটা
কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার একটি সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন কেন্দ্র। ঢাকা থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার বরিশাল থেকে ১০৮ কিলোমিটার। পর্যটকদের কাছে কুয়াকাটা সাগর কন্যা হিসেবে পরিচিত, প্রায় ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সৈকত বিশিষ্ট কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। এখানকার সৈকত এর একপাশে বিশাল সমুদ্র অন্য পাশে আছে সারি সারি নারিকেল গাছ। এখানে প্রায় সারাবছর সমুদ্র সৈকতে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য দেখা যায়। সৈকতে চাইলে মোটরসাইকেল এবং ঘোড়া ও ভাড়া করে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। তাছাড়াও আরো বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেমনঃ ফাতরার বন, কুয়াকাটার কুয়া, সামী বৌদ্ধ মন্দির, কেরানিপাড়া, আলীপুর মৎস বন্দর, মিশ্রি পাড়া বৌদ্ধ মন্দির, শুটকি পল্লী, এবং গঙ্গামতির জঙ্গল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ফাতরার চর:
কুয়াকাটা সমুদ্রের বিস্তৃর্ণ বালিয়াড়ি ছেড়ে পশ্চিমদিকে গেলে চোখে পড়বে খোলা জলের ছোট্ট স্রোতস্বিনী একটি নদী ও বিক্ষুব্ধ সাগর মোহনার বুকে জেগে ওঠা ফাতরার বন বা ফাতরার চর নামক সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। এর আয়তন আনুমানিক ৯,৯৭,৫০৭ একর। ইতিমধ্যে এটি দ্বিতীয় সুন্দরবন হিসেবে পরিচিতি ও খ্যাতি পেয়েছে। এখানে রয়েছে কেওড়া, গেঁওয়া, সুন্দরী, গরান, বাইন, গোলপাতা এবং ফাতরা ইত্যাদি ম্যানগ্রোভ প্রজাতির উদ্ভিদ। এছাড়াও এখানে দেখা মিলবে বানর, বন্য শুকর, নানা প্রজাতির পাখি ও অজগর, গোখরা, গুই সাপের মত সরীসৃপ দেখা পেতে পারেন ভাগ্য সহায় হলে। কুয়াকাটা থেকে প্রতিদিন অসংখ্য ট্রলার বনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ইচ্ছে করলে রিজার্ব করেও যাওয়া যায় সময় লাগবে ২ ঘণ্টার মত। এককথায় ঘন সবুজ বন পেরিয়ে সাগরের বিশালতা মুগ্ধ করবে যেকোনো ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের।
শুটকি পল্লী
জেলে শুটকি পল্লীর অবস্থান কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম প্রান্তে। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে শুটকি পল্লীর দূরত্ব ২ কিলোমিটার। এখানে সাধারণত ভ্যান, অটো ও মোটরসাইকেলেও যাওয়া যায়। এখানে মূলত নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শুটকি তৈরির মৌসুম চলে। সমুদ্র থেকে মাছ ধরে সৈকত এর পাশেই শুকিয়ে শুটকি তৈরি করা হয়। চাইলে জেলেদের এই কর্মব্যস্ততা দেখে সময় কাটাতে পারবেন এবং কম দামে কিনে আনতে পারবেন বিভিন্ন ধরনের পছন্দের শুটকি। এই শুটকি পল্লীতে স্থানীয় মেয়েরাই বেশি কাজ করেন যেহেতু পুরুষরা সাধারণত গভীর সমুদ্র মাছ ধরা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। পর্যটকরা তাজা মাছ কেটে শুটকি প্রক্রিয়াজাত করার দৃশ্য দেখতে রীতিমতো এখানে ভিড় জমায়। এছাড়াও দেখতে পাবেন জেলেদের ইলিশ শিকারে সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালী করার জীবন-জীবিকার যুদ্ধ।
গঙ্গামতির জঙ্গল
গঙ্গামতির জঙ্গলের পূর্ব দিকে গঙ্গামতী খাল পর্যন্ত এসে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত শেষ হয়েছে। আর এই জায়গা থেকেই গঙ্গামতির জঙ্গল শুরু। অনেকে একে গজ মতির জঙ্গল বলে থাকেন। বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ছাড়াও এই জঙ্গলে দেখা মিলে বিভিন্ন রকমের পাখি, বন মোরগ-মুরগি, বানর ও বন্য শুকর ইত্যাদি পশুপাখির। গঙ্গামতির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পশু পাখি দেখার জন্য প্রতিদিনই প্রায় শত শত পর্যটক গঙ্গামতি জঙ্গল পরিদর্শন করতে আসেন।
কুয়াকাটার কুয়া
কুয়াকাটার নামকরণ এর পেছনে যে ইতিহাস আছে সেই ইতিহাসের সাক্ষী কুয়াটি এখনও রয়েছে। এই কুয়াটি দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে রাখাইনদের বাসস্থল কেরানি পাড়ায়। এ পাড়ায় প্রবেশ করতেই প্রাচীন এক কুয়া দেখতে পাবেন। কথিত আছে ১৭৮৪ সালে মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে রাখাইনরা বঙ্গোপসাগরের তীরে রাঙ্গাবালী দ্বীপে এসে আশ্রয় নেন। সাগরের নোনা জল ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় তারা এখানে মিষ্টি পানির জন্য কূপ খনন করে আর সে থেকে জায়গাটি ধীরে ধীরে কুয়াকাটা নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। বর্তমানে প্রতিদিন যারা কুয়াকাটা পরিদর্শন করতে আসেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগ পর্যটকই এই কুয়াটি দেখার জন্য এখানে আসেন।
কেরানিপাড়া
সীমা বৌদ্ধ মন্দির এর রাস্তা ধরে একটু এগিয়ে গেলেই রাখাইনদের আবাসস্থল কেরানিপারা রাখাইন পল্লী। এখানে এলাকার রাখাইন নারীরা কাপড় বুনতে বেশ দক্ষ এবং তাদের তৈরি শীতের চাদর অনেক আকর্ষণীয়। শীত মৌসুমে পোশাক তৈরির ধুম পড়ে কুয়াকাটা রাখাইন পল্লী গুলোতে। দিন-রাত পরিবারের সবাই মিলে মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করে বাহারি ডিজাইন ও নানা রঙের পোশাক। আর এই পোশাক কিনতে ভিড় করে ঘুরতে আসা পর্যটকগন।
মিশ্রি পাড়া বৌদ্ধ মন্দির
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে রাখাইনদের একটি গ্রাম মিশ্রি পাড়া। এখানে রয়েছে বড় একটি বৌদ্ধ মন্দির, প্রচলিত আছে এই মন্দিরের ভেতরে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে। এছাড়াও এখান থেকে সামান্য দূরে আমখোলা গ্রামে আছে এ অঞ্চলের রাখাইনদের সবচেয়ে বড় বসতি। বর্তমানে প্রতিদিন এই রাখাইনদের জীবনযাত্রা দেখার জন্য শত শত পর্যটক এই মিশ্রি পাড়ায় আসেন।
লেবুর চর
কুয়াকাটা মূল ভূখণ্ডের পশ্চিম দিকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে নয়নাভিরাম একটি স্থান লেবুর চর। এখানে রয়েছে প্রায় এক হাজার একর এলাকাজুড়ে বনাঞ্চল। লোকমুখে শোনা যায় এই লেবুর চরে গেলে দেখা মেলে অসংখ্য মৌসুমী চিংড়ির রেনু শিকারীদের। এছাড়াও বনের ভিতর অসংখ্য চেনা অচেনা গাছ পালা যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কেওড়া, গেওয়া, গোরান, কড়ই, গোলপাতা ইত্যাদি এবং বনের ভিতর অসংখ্য মৌমাছি দেখতে পাবেন। কুয়াকাটা সৈকতের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত হওয়ায় এই চরে কুয়াকাটা থেকে সহজেই যাওয়া যায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেষ্টিত এই চর পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। পূর্বে এটি সুন্দরবনের একটি অংশ ছিল কিন্তু এখন এটি সুন্দরবন থেকে বিচ্ছিন্ন একটি বনাঞ্চল, বর্তমানে লেবুর চরে প্রতিদিন শত শত পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন।
আলীপুর মৎস্য বন্দর:
কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার উত্তরে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় মৎস্য ব্যবসা কেন্দ্র আলিপুর। প্রতিবছর শীত মৌসুমে মৎস্য বন্দরে সামুদ্রিক মাছের রমরমা বাণিজ্য চলে এখানে প্রায় ৩০০ মাছ বিক্রির আড়োৎ রয়েছে যেগুলোতে প্রতিদিন শত শত কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা হয়। এখানে সামুদ্রিক ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের মাছ দেখা যায়। এখানকার স্থানীয় লোকদের আয়ের প্রধান উৎস মৎস্য শিকার এবং এই আলিপুর মৎস্য বন্দরকে কেন্দ্র করেই।